দিল্লি পুলিশ এক চীনা মহিলাকে ভারতবিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু অভিযুক্ত মহিলা নিজেকে একজন বৌদ্ধ সন্ন্যাসিনী বলে দাবি করছে। সে ভারতে নেপালি পরিচয় দোলমা লামা নামে বসবাস করছিল। কিন্তু এক অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। মহিলাকে আটক করার পর দিল্লি পুলিশের সাথে কথাবার্তার সময় তিনি অনর্গল ইংরেজি ও চীনা ভাষায় কথা বললেও তিনি নেপালি ভাষা জানতেন না।
তারপরই উদ্ধার হয় এক পাসপোর্ট যেখানে তার নাম জানা যায় কাই রুও, সে চীনের হাইনান প্রদেশের বাসিন্দা। ফরেনার্স রেজিস্ট্রেশন অফিসের রেকর্ড অনুযায়ী এই পাসপোর্টের ভিত্তিতেই কাই ২০১৯ সালে ভারতে আসেন। তার পর পশ্চিমবঙ্গের রানিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ২০২০ সালে এই মহিলা নেপালে প্রবেশ করে। সেখানে নেপালি আইডি সংগ্রহ করার পর, সে আবারো নেপালি পরিচয়ে ভারতে ফিরে আসেন ও দেশের রাজধানীতে তিব্বতি উদ্বাস্তু কলোনী, মজনুকা টিলা-তে বসবাস শুরু করে।
কাই রুও তদন্তের সময় দাবি করে সে বৌদ্ধ তাই চীনা কমিউনিস্ট নেতারা তাকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন। সেই জন্যই সে পালিয়ে ভারত চলে এসেছে। কিন্তু এক সূত্র সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছে কাই রুও একজন “সুপ্রশিক্ষিত এবং ধূর্ত মহিলা, সে এই ধরনের দাবি করে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে, আমরা দেখেছি সে গুপ্তচরবৃত্তি করত এবং দেশবিরোধী কার্যকলাপের সাথে ও জড়িত।”
পুলিশ আধিকারিকরা এই মহিলা চীনা গুপ্তচরের জাতীয় রাজধানীতে বসবাস করার তথ্য পাওয়ার পরই পুলিশ একটি দল তৈরি করে অভিযান চালায় ও বৃহস্পতিবার তার আস্তানা থেকে তাকে আটক করা হয়। সমস্ত তথ্য মূল্যায়ন করার পর কাই ভারতবিরোধী কার্যকলাপ প্রচার করছে বলে প্রমাণিত হয়েছে।
জনা গিয়েছে কাই সারা দেশে অশান্তি ছড়ানোর প্রচেষ্টা করছিল, তদন্তে কাই রুওকে বিভিন্ন সরকারি অফিসের আসেপাশে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে বলে অনেকেই জানায়। পুলিশ বর্তমানে সে কী কী ধরনের তথ্য বা নথি জোগাড় করে প্রেরণ করতে সক্ষম হয়েছে তা জানার চেষ্টা করছে। পুলিশ তার বিরুদ্ধে ধারা ১২০ বি (অপরাধী ষড়যন্ত্র), ৪১৯ (ব্যক্তিত্ব দ্বারা প্রতারণা), ৪২০ (প্রতারণা এবং অসাধুভাবে সম্পত্তি বিতরণে প্ররোচিত করা), ৪৬৭ (মূল্যবান নিরাপত্তা জালিয়াতি) এবং ভারতীয় দণ্ডবিধি ও বিদেশী আইনের অন্যান্য প্রাসঙ্গিক ধারাগুলির অধীনে মামলা দায়ের করেছে।
কাই-এর গ্রেপ্তারের কথা জাতীয় তদন্ত সংস্থা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলিকেও জানানো হয়েছে। কাই তার আইন উপদেষ্টা দীপক ত্যাগীর মাধ্যমে, চীনে তার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলার জন্য অনুমতি চেয়ে আবেদন জানিয়েছে আধিকারিকদের।