শনিবার গভীর রাতে জম্মু এয়ারফোর্স স্টেশনে দুটি বিস্ফোরণের (Jammu Airforce Base Blast) ঘটনা ঘটে। প্রথম বিস্ফোরণটি রাত ১:৩৭ মিনিটে হয় এবং দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি হয় ঠিক ৫ মিনিট পর রাত ১:৪২ মিনিটে। বায়ুসেনা টুইট করে জানায়, প্রথম বিস্ফোরণটি বিল্ডিংয়ের ছাদে এবং দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি খোলা জায়গায় হয়। বিস্ফোরণের কারণে বিল্ডিংয়ের ছাদ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
বিস্ফোরণে জঙ্গি-যোগের দিকটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এনআইএ এবং এনএসজির দল তদন্তের জন্য এয়ারফোর্স স্টেশনে পৌঁছেছে বলে গেছে। সূত্রের খবর, এখন পর্যন্ত তদন্তে ড্রোন থেকে IED ফেলার বিষয়ে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনুমান করা হচ্ছে, প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান থেকে ড্রোনের মাধ্যমে IED ফেলা হয়েছে। কারণ এয়ারফোর্স স্টেশন এবং সীমান্তের মধ্যে দূরত্ব মাত্র ১৪ কিলোমিটার এবং ড্রোন দিয়ে ১২ কিমি পর্যন্ত অস্ত্র ফেলা যেতে পারে। ড্রোন হামলার হুমকির কারণে আম্বালা, পাঠানকোট এবং আওন্তিপোরা এয়ারবেসগুলিকেও উচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে।
এই বিস্ফোরণ করার জন্য দুটি ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এর আশঙ্কা আরও গভীর কারণ গোলাবারুদ ফেলা ড্রোনগুলি রাডারে ধরতে সমস্যা হয়। এরকম অনেকগুলি ড্রোন অতীতেও বহুবার রাডার থেকে বেঁচে গিয়েছিল। সূত্রের খবর, হামলাকারীদের লক্ষ্য ছিল এয়ারফোর্স বেস (Airforce Base)-এ দাঁড়িয়ে থাকা বিমানগুলি। তবে কোনো সরঞ্জাম বা বিমানের কোনো ক্ষতি হয়নি। এটি ড্রোন হামলা, নাকি বিস্ফোরণের অন্য কোনো কারণ ছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই বিস্ফোরণের পিছনে যদি কোনও ড্রোন হামলার প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে ভারতের কোনো সামরিক ঘাঁটিতে হওয়া প্রথম এই ধরনের ড্রোন আক্রমণ এটি।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং ভাইস এয়ার চিফ এয়ার মার্শাল এইচএস অরোড়ার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সম্বন্ধে খোঁজখবর নিয়েছেন। বিস্ফোরণে ড্রোন ব্যবহারের বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক নিশ্চিতকরণ পাওয়া যায়নি এবং তদন্ত এখনও চলছে বলে স্পষ্ট করে কিছুই বলা হচ্ছে না। তবে বিমান বাহিনী স্টেশনে এমন কিছু ঘটেছিল যার কারণে বিস্ফোরণ ঘটেছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
একটি ড্রোন ধরা খুব কঠিন কাজ, কারণ বিশ্বজোড়া সংস্থাগুলি সনাক্তকরণের জন্য তিন ধরণের কৌশল অবলম্বন করে। প্রথম আরএফ-পর্যবেক্ষণ, দ্বিতীয় রাডার এবং তৃতীয় অপটিক্যাল সেন্সর (ক্যামেরা)। তবে তিনটিরই নিজস্ব সীমাবদ্ধতা রয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ আরএফ-পর্যবেক্ষণ প্রাক-প্রোগ্রাম এবং স্যাটেলাইট ড্রোনগুলিকে ধরতে পারে না। অনুরূপভাবে রাডারের ক্ষেত্রে, ড্রোন সনাক্ত করার ক্ষমতা তার পরিসরের উপর নির্ভর করে। একইভাবে, অপটিক্যাল সেন্সর অর্থাৎ ক্যামেরা কেবল স্বল্প দূরত্বের ড্রোন সনাক্ত করতে সক্ষম। যদি দীর্ঘ দূরত্বের ড্রোন ক্যাপচার করতে হয়, তবে তার জন্য থার্মাল ক্যামেরা ব্যবহার করতে হবে, যা খুব ব্যয়বহুল।