‘ঘুমই সেরা ধ্যান’ একথা বলেছিলেন দলাই লামা। তবে সেই ঘুমই বিপত্তির কারণ হতে চলেছিল ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের জন্য। যাত্রী নিয়ে সুদান থেকে ইথিওপিয়ার দিকে রওনা হয়েছিল ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের বোরিং 737 প্লেনটি। কিন্তু মধ্য আকাশে প্লেনের(Plane accident) দুই পাইলট ঘুমিয়ে পড়ায় প্লেনটি তার নির্ধারিত ল্যান্ডিং মিস করে উড়ে চলে আরো সামনের দিকে।
ঘটনাটি 15 আগস্ট ফ্লাইট ET-343 র সঙ্গে ঘটেছে। এদিন সাধারণ ভাবেই প্লেনটি(Plane) ভোর 3.30 এ সুদানের খার্তুম এয়ারপোর্ট থেকে রওনা দেয় এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে 37,000 ফুট উচ্চতায় উড়তে থাকে। পাইলটরা এই সময় প্লেনের অটোপাইলট মোড অন করে নিজেরা ঘুমিয়ে পরেন। আর এখানেই হয় বিপত্তি, ফ্লাইটের অটোপাইলটে সেট করা স্থান আদ্দিস আবাবা এয়ারপোর্ট ক্রস করে গেলেও পাইলটদের ঘুম ভাঙ্গে না।
ফ্লাইটটি নির্দিষ্ট ল্যান্ডিং মিস করার পর ফ্লাইটের সেট করা অটোপাইলট নিজে থেকেই ডিসকানেক্ট হয়ে পরে এবং ককপিটে অ্যালার্ম বেজে ওঠে। আর এই অ্যালার্মের শব্দেই ঘুম ভাঙ্গে দুই পাইলটের, কোনো দুর্ঘটনা ঘটার আগেই তারা সামলে নেয় প্লেনটিকে। তবে এই ঘটনার জন্য 1 ঘন্টা 50 মিনিটের এই যাত্রা পথে আরো 25 মিনিট বেশি সময় লাগে। যদিও এই ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর মেলেনি এবং প্লেনটিকেও পাইলটরা সুরক্ষিত ভাবে অবতরণ করাতেও সক্ষম হয়েছে।
এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল থেকে জানানো হয় তারা বারবার প্লেনটির(Plane) সাথে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করলেও তারা ব্যার্থ হন। প্লেনটি রানওয়ে ক্রস করার পর আরো প্রায় 25 মিনিট বেশি উড়ে আদ্দিস আবাবা এয়ারপোর্টে ফিরে 25L রানওয়েতে অবতরণ করে। প্লেনটির ADS-B ডাটা থেকে জানা যায় প্লেনটি রানওয়ে ক্রস করার পরও FL370 বা 37,000 ফুট উচ্চতা বজায় রেখে উড়তে থাকে।
বিমান চলাচল বিশ্লেষক অ্যালেক্স মাচেরাস(Alex Macheras) একটি টুইটে এই বিমানের গতিপথের ছবি ও ঘটনার বিবরণ লিখে পোস্ট করেন। ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্স ET-343 র এই দুই পাইলটকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে এবং এই ঘটনার তদন্তের ফলাফল অনুযায়ী পরবর্তীতে তাদের উপর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে তারা জানিয়েছে।
তবে এই ঘটনায় প্রথম নয় এর আগেও নিউইয়র্ক থেকে রোম যাওয়া ITA এয়ারওয়েস এর প্লেনের দুই পাইলট 38,000 ফুটে উড়ার সময় ঘুমিয়ে পড়েন এবং এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল 10 মিনিটের জন্য প্লেনের সাথে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে। ফলত জঙ্গি হামলার ভয়ে ফাইটার জেটকে প্রযন্ত প্রস্তুত হতে বলা হয় এবং শেষ মুহূর্তে ভাগ্যক্রমে পাইলটরা আবারো যোগাযোগ স্থাপন করে। তবে বারবার এই ঘটনায় যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে এবং এয়ারলাইন কম্পানি গুলিকে দায়ি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন Indian Air Force: স্বদেশি অ্যাটাক হেলিকপ্টারে আরও শক্তিশালী ভারতীয় বায়ুসেনা