দেশে করোনা ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কার মাঝেই এবার ‘জিকা ভাইরাস‘ (Zika Virus)-এর হানা। এই নতুন ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে কেরালায়, যার বাহক মশা। সর্তকতা জারি করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। কেরালায় প্রায় ১৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন এই জিকা ভাইরাসে। তাঁদের মধ্যে একজন ২৪ বছর বয়সী অন্তঃসত্ত্বা মহিলা।
বৃহস্পতিবার কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ বলেছেন, রাজ্যের একজন চব্বিশ বছর বয়সী গর্ভবতী মহিলার মধ্যে মশা বাহিত রোগ ‘জিকা ভাইরাস’-এর প্রথম ঘটনা সনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও তিরুবনন্তপুরমে (Thiruvananthapuram or Trivandrum) চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী সহ আরও ১৩ জন ব্যক্তির মধ্যে জিকা ভাইরাসের উপসর্গ দেখতে পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের নমুনাগুলি পরীক্ষা করার জন্য পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি (National Institute of Virology)-তে পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকে রিপোর্ট আসার পর জানা যায় তাঁরা জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত। তিরুবনন্তপুরম থেকে পাঠানো ১৯ টি নমুনার মধ্যে ওই ১৩ জন চিকিৎসক সহ স্বাস্থ্যকর্মী জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করা হয়েছিল।
জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত চব্বিশ বছর বয়সী অন্তঃসত্ত্বা মহিলা কেরলের তিরুবনন্তপুরম জেলার বাসিন্দা। তিনি ৭ জুলাই তাঁর সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তাঁর সন্তানের মধ্যেও জিকা ভাইরাসের লক্ষণ ধরা পড়েছে বলে জানা গেছে। ২৮ জুন মহিলার জ্বর, মাথা ব্যথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে লাল দাগ দেখতে পাওয়ার পর তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তি করার পর মহিলা জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত বলে জানা যায়। এরপর নিশ্চিত হওয়ার জন্য, তাঁর নমুনা পরীক্ষা করতে পাঠানো হয় পুনের এনআইভি-তে। মহিলার শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল রয়েছে। ওই মহিলা সম্প্রতি রাজ্যের বাইরে কোথাও ভ্রমণ করতে যাননি। তবে তাঁর বাপের বাড়ি তামিলনাড়ু সীমান্তে এবং এক সপ্তাহ আগে মহিলার মায়ের শরীরেও জিকা ভাইরাসের উপসর্গ দেখা যায়।
জিকা ভাইরাসের লক্ষণগুলি ডেঙ্গুর মতো হয়। এই ভাইরাসের লক্ষণগুলি হল জ্বর, ত্বকে লাল ফুসকুড়ি, জয়েন্টে ব্যথা এবং চোখ লাল হয়ে যাওয়া। জিকা ভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেক জনকে পঙ্গু হয়ে যেতে দেখা গেছে। এই ভাইরাসটি বেশিরভাগ গর্ভবতী মহিলাদেরকে প্রভাবিত করে। যার ফলে জন্ম নেওয়া শিশু একটি অনুন্নত মস্তিষ্ক নিয়ে জন্মগ্রহণ করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এডিস মশার মাধ্যমে জিকা ভাইরাস ছড়ায়। এই এডিস মশা যদি কোনো ব্যক্তিকে কামড়ায়, তবে তিনি জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হবেন। পরে ওই মশাটি কোনো সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ালে, তিনিও আক্রান্ত হতে পারেন এই ভাইরাসে। এভাবেই একজনের শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে।
এই জিকা ভাইরাস যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, তার জন্য কেরল সরকার সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন