পশ্চিমবঙ্গ থেকে উদ্ধার হলো প্রায় ৫৩ লক্ষ টাকার জালিয়াতি। কেন্দ্র সরকারের ‘ মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি স্কিম’ এর আওতায় বিতরণ করা মজুরিতে এই অর্থ জালিয়াতিতে পশ্চিমবঙ্গে উদ্ধার হয়েছে যা ৫২.৩৬ লক্ষ টাকা। একদিকে যারা কাজ করেছেন তারা ঠিকমতো মাইনে পাননি, তার ওপর ভুয়ো মজুরির দূর্নীতির অভিযোগ। রাজ্য সরকারের গাফিলতি প্রভাব ফেলতে পারে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনেও।
কেন্দ্র সরকার থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ রাজ্য গুলিকে প্রদান করা হয়, সেই অর্থের সঠিক মূল্যায়ন যে আমাদের রাজ্যে হচ্ছিল না এই অভিযোগ ছিল কেন্দ্রের। কেন্দ্রের তরফ থেকে নিযুক্ত করা মহত্মা গান্ধীর ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট স্কিম এর একটি সামাজিক নিরীক্ষণ (social audit) দলের দ্বারা মোট ৩৩৫৮ টি অভিযোগ দায়ের করা হয় কেন্দ্রের কাছে। প্রায় ২.৫ কোটি টাকার জালিয়াতির অভিযোগ।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা এবং গ্রামীণ মানুষের স্বনির্ভরশীলতার প্রকল্পগুলিতে পশ্চিমবঙ্গের অস্পষ্টতা কয়েক বছর আগেই কেন্দ্রের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায়। তাই এক বছর আগে কেন্দ্র সরকার রাজ্যের কাছে ‘মহত্মা গান্ধী ন্যাশানাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি স্কিম’ প্রদত্ত অর্থের হিসাব চেয়ে বসে। সেই অর্থের হিসাব না দিতে পারায় পশ্চিমবঙ্গে অর্থ প্রদান স্থগিত রাখে কেন্দ্র। এই উদ্দেশ্যে অনেকবার সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, কিন্তু এতে কোনো লাভ হয়নি। তাই এবার কেন্দ্রের প্রশ্নের উত্তর দিতে উদ্ধার হলো ৫২.৩ লক্ষ্য টাকার জালিয়াতি।
কেন্দ্রের তরফ থেকে আমাদের রাজ্যের তহবিল বন্ধ করে দেবার পরই পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৫২.৩৬ লক্ষ টাকার জালিয়াতি উদ্ধার হয়েছে। সঙ্গে ডজন খানেক এফ.আই.আর। এর মধ্যে যার চারটি সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ছিল। এছাড়াও ১১৯ জন কর্মীর বিরুদ্ধে প্রমাণ সহযোগে শাস্তিমূলক কার্যক্রমের অভিযোগ করা হয়েছে।
আধিকারিকরা জানিয়েছেন, গ্রামীন কর্মসংস্থান স্কিমের জালিয়াতিতে মোট উদ্ধার হওয়া টাকার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে তিনটি জেলা- দক্ষিণ দিনাজপুর ১৯.১২ লক্ষ, উত্তর ২৪ পরগণা ১০.৫৮ লক্ষ এবং পূর্ব মেদিনীপুর ৯.৭১ লক্ষ টাকা।
মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট, ২০০৫ এর ধারা ২৭ এর অধীনে, কোনো রাজ্যের তরফ থেকে অসদাচরণের অভিযোগ থাকলে কেন্দ্র সেই রাজ্যের তহবিল স্থগিত রাখতে পারে। পশ্চিমবঙ্গ কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত টাকার সঠিক হিসাব না দিতে পারায় এই আইনের অধীনে আমাদের রাজ্যের তহবিল স্থগিত রাখে কেন্দ্র সরকার। গ্রামীণ লোকেরা যারা প্রকল্পের অধীনে কাজ করেছিল তারা সময়মতো বেতন পায়নি, তার উপরে দুর্নীতি। আগামী বছরের শুরুতেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। এর আগে এই ঘটনা রাজ্য সরকারের জন্য উদ্বেগর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী গত বুধবার টুইট করে বলেছেন, ‘রাজ্য সরকার প্রায় এক হাজার কোটি জাল জব কার্ড বানিয়ে কেন্দ্রীয় তহবিলের টাকা আত্মসাৎ করেছে। রাজ্যের শাসক দল আমাদের রাজ্যকে জব কার্ড দুর্নীতিতে প্রথম স্থানে নিয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই এরাজ্যে বাতিল হয়েছে প্রায় চার লক্ষ জব কার্ড।’ অন্যদিকে তৃণমূল মুখপত্র কুনাল ঘোষ পালটা টুইট করে বিজেপিকে আঘাত করেছে।
WB Govt fraudulently swelled up this figure by 'Overinflating' Wages, amounting to 1000s of Crores (₹) while embezzling MGNREGA funds by using "Fake" Job Cards.
Under the corrupt TMC rule, WB ranks 1st in India in issuing Fake Job Cards. 4 lakh Cards have already been discarded. https://t.co/Q8WMgzmLeb pic.twitter.com/3v3itP3Tli— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) December 21, 2022