Friday, May 3, 2024
More

    বারাণসীর অনুকরণে কলকাতায় গঙ্গারতি

    বারাণসীর গঙ্গারতি দেখে মুগ্ধ আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনীতির বেড়াজাল টপকে ঘটাতে চান ধর্মীয় মেলবন্ধন। রাজ্যে ফিরে রাজধানীতেই গঙ্গারতির প্রস্তাব দেন তিনি। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে স্থান পরিদর্শনের কাজ। দায়িত্ব থাকছে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এর উপরে।

    উত্তর প্রদেশের বারাণসী ভারতীয় ইতিহাসে এক অতি প্রাচীন শহর। একে ভক্তির কেন্দ্রস্থল বলা চলে। সর্ব ধর্মের মিলন এই স্থানে। বারাণসী চিনতে মাত্র দুটো শব্দই যথেষ্ট এক, বারাণসী পান আর দুই সন্ধ্যারতি। বারাণসীর দশাশ্বমেধ ঘাটের কথা কম বেশি সবাই শুনেছেন। সন্ধ্যাকালে মা গঙ্গার আরতি এখানের এক বিশেষ রীতি। শুধু ভারত নয় বিদেশ থেকেও শ’য়ে, শ’য়ে লোকে বারানসিতে ছুটে আসে এই অপূর্ব আরতি দেখতে।

    কিছুদিন আগেই আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গিয়েছিলেন উত্তর প্রদেশ। সেখানে সমাজবাদী পার্টির ভোট প্রচারে। দিনশেষে পৌঁছে যান দশাশ্বমেধ ঘাটে। মানুষের ভিড় আর ভক্তির মাঝে অপূর্ব সেই গঙ্গারতি দেখে মুগ্ধ হয়ে যান তিনি। রাজ্যে ফিরেই জারি করেন নতুন ঘোষণা। এবার শুধু উত্তর প্রদেশ নয়, গঙ্গারতির রেশ নামবে কলকাতার বুকেও। দায়িত্ব সঁপে দেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এর হাতে। কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে প্রস্তাব পাশ করানো হয়। কিন্তু সেই প্রস্তাব কার্যকর হয়নি।

    সোমবার নবান্নে আবারও মুখ্যমন্ত্রী গঙ্গারতির বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেন মেয়রকে। সঙ্গে সতর্ক করে বলেন, ‘এমন একটা জায়গা বাছতে হবে যেটা হবে শান্তির পিঠস্থান। সেখানে একটা মন্দির থাকবে। সবার যেন বসার জায়গা থাকে। কেউ যাতে জলে না পড়ে যায়, সেটাও ভালো করে নজরে রাখতে হবে। তাড়াহুড়ো করার দরকার নেই। দু’বছর সময় লাগে লাগুক। ব্যবস্থাটা যেন নিরাপদ হয়।’

    প্রাথমিকভাবে গঙ্গারতির জায়গা হিসেবে ঠিক হয়েছে কলকাতার বাজে কদমতলা ঘাট। সেই সূত্রে গত মঙ্গলবার বিকেলে বাজে কদমতলা ঘাট পরিদর্শনে যান কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ তারক সিং এবং দেবাশিস কুমার-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। তাদের বক্তব্যে,মুখ্যমন্ত্রীর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এলে প্রতি শনি অথবা রবিবার মাসে চারদিন করে সন্ধ্যায় গঙ্গারতির আয়োজন করা হবে।বেহালার একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে এই পরিকল্পনা রূপায়ণ করবে কলকাতা পুরসভা।

    রাজনীতির আসরে ধর্মের স্লোগান নতুন নয়। উত্তর প্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গ দুটি ভিন্ন রাজ্যে ভিন্ন সরকারের রাজত্ব। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দুই দল বরাবরই একে অপরের সমালোচক। তবে এবার সংস্কৃতিতে ঘটবে মেল বন্ধন।

    বলা বাহুল্য গঙ্গারতি পশ্চিমবঙ্গে এই প্রথম নয়, বেশ কয়েক বছর ধরেই হাওড়ার রামকৃষ্ণপুর ঘাটে চলে আসছে গঙ্গারতি। সপ্তাহের ছুটির দিন অর্থাৎ শনি ও রবিবার সেখানে ভিড় জমান অনেক মানুষ। তৃণমূল কাউন্সিলর বিজয় উপাধ্যায় কলকাতার নিমতলা ঘাটে ৭-৮ বছর ধরে গঙ্গারতির আয়োজন করছেন । এছাড়াও মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পৌরসভার উদ্যোগেও কয়েক বছর ধরে চালু হয়েছে গঙ্গারতি।সদ্য গঙ্গারতির উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে হুগলি জেলার কোন্নগর পৌরসভাও।

    Related Articles

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

    Stay Connected

    3,541FansLike
    3,210FollowersFollow
    2,141FollowersFollow
    2,034SubscribersSubscribe
    - Advertisement -

    Latest Articles