দীপংকর সাহা: বাংলাদেশে (Bangladesh) দূর্গাপূজোর নিরাপত্তায় ২২ জেলায় বাংলাদেশ বডার গার্ড নামানোর পরেও আবার দশমীর দিন বাংলাদেশের মন্দিরে হামলা চালানোর ঘটনা ঘটল বলে জানা যাচ্ছে। বাংলাদেশের নোয়াখালিতে অবস্থিত ইসকনের একটি মন্দিরে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবের অভিযোগ ওঠে শুক্রবার। মন্দিরে কিছু জিনিসে আগুন লাগানো ও প্রতিমা ভাংচুর করার অভিযোগ করা হয় ইসকনের তরফে। এমনকি মন্দিরে উপস্থিত ভক্তদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ করেন ইসকন মুখপাত্র।
জানা গেছে, নোয়াখালির চৌমুহনীতে প্রায় ৫০০ জন দুষ্কৃতী মন্দিরে হামলা চালায়। এর আগেও বাংলাদেশে প্রাণহানি ও হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ জুড়ে দূর্গা পূজোর বিভিন্ন মণ্ডপে হামলা চালাচ্ছে সংখ্যাগুরুরা বলে অভিযোগ। এদিকে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় মন্দির-মণ্ডপে হামলার প্রতিবাদে আজ চট্টগ্রামে আধাবেলা হরতালের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ।
উল্লেখ্য এর আগেও বাংলাদেশ জুড়ে নানা মন্দিরে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। কয়েক জায়গায় পুলিশের সঙ্গে হামলাকারীদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।
এছাড়া নোয়াখালীর হাতিয়া, চট্টগ্রামের বাঁশখালী এবং কক্সবাজারের পেকুয়াসহ বেশ কয়েকটি স্থানে পূজামণ্ডপে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
পূজা উদযাপন পরিষদের কুমিল্লা জেলা ইউনিটের সম্পাদক নির্মল পাল বলছেন, “পূজা বানচালের জন্য পরিকল্পিতভাবে কোরান রেখে এ ঘটনা ঘটিয়ে তারাই এখন শহরজুড়ে পূজাবিরোধী বিক্ষোভ করছে। এর আগেও এরকম ঘটনা বাংলাদেশে বহুবার ঘটেছে। ফেসবুকে ভুয়ো খবর রটিয়ে বাংলাদেশি হিন্দুদের উপর সঙ্গবদ্ধভাবে হামলা চালানো হয়েছে।”
বাংলাদেশে এই একই ধরনের আরও অনেক হামলার ঘটনার উদাহরণ রয়েছে। যেখানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর পোষ্ট দেবার অভিযোগ তুলে হিন্দুদের বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল।
২০১২ সালে কক্সবাজারে রামুর এক বৌদ্ধ পল্লীতে ফেসবুকে ধর্ম অবমাননাকর পোষ্ট দেবার অভিযোগ তুলে হামলা চালিয়ে বাড়িঘরে ও মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ঐ ঘটনায় যে ব্যক্তি ফেসবুকে পোষ্ট দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ তিনি গত পাঁচ বছর ধরেই নিখোঁজ ছিলেন।
২০১৩ সালে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার বনগ্রাম বাজারে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে অর্ধশত হিন্দু বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু পরে পুলিশের তদন্তে কথিত ধর্মীয় অবমাননার কোনো পোস্ট পাওয়া যায় নি।
এরপর ২০১৬ সালের ২৯শে অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে অনেকটা একই কায়দায় একটি হিন্দু পল্লীতে হামলা চালানো হয় বলে একই ধরণের অভিযোগ রয়েছে ।