হাতে রয়েছে ডিসেম্বরের শেষ কটা দিন, আসতে চলেছে নতুন বছর ২০২৩। জ্যোতিষশাস্ত্রে শুরু হয়ে গেছে নতুন বছরের ভবিষ্যতগণনা। মানুষই বলে দেয় মানুষের ভবিষ্যৎ। চলুন আমরা এবার জেনে নেবো কেমন হতে চলেছে নতুন বছর?
তবে জ্যোতিষবিদ্যায় নয়,এই ভবিষ্যতবাণী করেছেন বুলগেরিয়ার এক অন্ধ ভবিষ্যতদ্রষ্টা। ভক্তকুলে তিনি বাবা ভাঙ্গা নামে পরিচিত। তিনি চোখে দেখতে পান না। অথচ বাতলে দিতে পারেন মহাবিশ্বের ভবিষ্যত। কে এই বাবা ভাঙ্গা? তার ভবিষ্যৎবাণী কতটা নিখুঁত? তাঁর ভবিষ্যৎবাণীতে ২০২৩ সাল আমাদের কেমন যাবে ? এই প্রশ্নের উত্তর থাকছে এই প্রতিবেদনে।
বুলগেরিয়ায় ১৯১১ সালের ৩১ শে জানুয়ারি জন্ম নেন ভ্যাঞ্জেলিয়া প্যান্দেভা গুশতেরোভার। অনুগামীরা তাঁকে বাবা ভাঙ্গা নামে ডাকে। অনেকের কাছে তিনি নস্ট্রাদামুস অফ বলকান নামেও পরিচিত। লোকমুখে প্রচারিত কথা অনুসারে মাত্র বারো বছর বয়সে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছিলেন বাবা ভাঙ্গা। অল্প বয়সেই দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে এক অদ্ভুত শক্তির মালিক হয়েছিলেন তিনি। নিজের চোখ অন্ধকার থাকলেও অন্যের ভবিষ্যৎ অনায়াসেই বলে দিতে পারতেন বাবা ভাঙ্গা। জীবিত কালে আগামী ৫০৭৯ সাল পর্যন্ত ভবিষ্যৎবাণী করে গেছেন তিনি। আশ্চর্যভাবে তার একাধিক ভবিষ্যতবাণী মিলে গিয়েছে হুবহু। ১৯৯৬ সালের ১১আগষ্ট ৮৫ বছর বয়সে মৃত্য হয় বাবা ভাঙ্গার।
বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যৎবাণী কতটা নিখুঁত তা জানতে গেলে কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরতে হয়।আমেরিকায় ৯/১১ সন্ত্রাস হামলা হোক বা চেরনোবিল দুর্ঘটনা। রাজকুমারী ডায়নার মৃত্যু, সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেঙ্গে যাওয়া, থাইল্যান্ডের সুনামি, বারাক ওবামার প্রেসিডেন্ট হওয়া সবই ছিল তার ভবিষ্যৎ বাণীর অঙ্গ। তবে তার রাতারাতি পরিচয় ছড়িয়ে পড়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়।
এই যুদ্ধের সময় সৈনিকদের পরিবারের লোক বাবা ভাঙার কাছে ছুটে আসতেন তাদের প্রিয় মানুষের খবর নিতে। ভবিষ্যৎ বাণীর মাধ্যমে তাদের অবস্থা বলে দিতেন তিনি। অবিশ্বাস্যভাবে তার ভবিষ্যৎবাণী মিলেও যেত। এছাড়াও ভবিষ্যৎ বাণী করে মিলিয়ে দিয়েছেন স্টালিনের মৃত্যু, ইন্টারনেটের রাজত্ব, ভার্চুয়াল জগত ইত্যাদি অনেক বিষয়। তবে সব ক্ষেত্রেই যে তার ভবিষ্যৎবাণী সফল হতো এমনটা নয়। এরকম অনেক উদাহরণ রয়েছে যেখানে বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যতবাণী ভুল প্রমাণিত হয়েছে অনায়াসে।
বাবা ভাঙ্গার এই ভবিষ্যৎ বাণীর উপরই ভিত্তি করে আজ জেনে নেব ২০২৩ সালের ভবিষ্যৎ কি হতে চলেছে পৃথিবীবাসীর কাছে।
- কক্ষপথ পরিবর্তন হবে পৃথিবীর:
বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যৎ বাণী অনুযায়ী ২০২৩ সালে ঘটবে কয়েকটি মহাজাগতিক ঘটনা, যার ফলে পৃথিবী তার কক্ষপথ পরিবর্তন করবে । সুদূর ভবিষ্যতে এর ফল হিসেবে কখনো রাত হবে না পৃথিবীতে, পৃথিবীর একদিক সদা আলোয় পরিপূর্ণ থাকবে।
- মানুষই কৃত্রিমভাবে মানব শিশু বানাবে ল্যাবটারিতে:
বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, ২০২৩ সালে, মানব শিশুদের ল্যাবেই তৈরি করা হবে এবং তাদের রং এবং লিঙ্গ তাদের পিতামাতারা নিজেদের ইচ্ছেমতো নির্ধারণ করবেন। এর ফলে সন্তানহীন দম্পতিরা অনায়াসেই নিজের আদলে গড়ে তুলবে নিজের শিশুকে।
- জৈবিক অস্ত্র দিয়ে হামলা:
বাবা ভাঙ্গা ২০২৩ সালে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, একটি দেশ জৈবিক অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করতে পারে। যার কারণে বিপুল সংখ্যক মানুষ মারা যাবে। বর্তমানে, ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে একটি যুদ্ধ চলছে, যেখানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বহুবার জৈবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়েছেন।
- পারমাণবিক বিদ্যুত্ কেন্দ্রে বিস্ফোরণ:
বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যৎবাণীতে, ২০২৩ সালে এশিয়া মহাদেশের একটি পারমাণবিক বিদ্যুত্ কেন্দ্রে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটবে। তার ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, এই ঘটনা প্রভাবিত করতে পারে ভারতকেও ।
বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যৎ বাণী অনুযায়ী ২০২৮ এ মানুষ শুক্রগ্রহে পারি দেবে। ভবিষ্যতে মানুষের সাথে সাক্ষাৎ হবে এলিয়েনদেরও।২০৪৬ সাল পর্যন্ত মানুষ নিজের অঙ্গ কৃত্রিমভাবে প্রতিস্থাপন করে আয়ু বাড়াবে ১০০ বছর। এমনকি তার ভবিষ্যৎ বাণী থেকে আমরা জানতে পরি পৃথিবীর ধ্বংস বছর ৫০৭৯।
ভবিষ্যৎ দেখা যায় না, অনুমান করা যায় মাত্র। সঠিকভাবে সঠিক দিশায় এগোলে হয়তো ভবিষ্যতের পূর্বানুমান পরিবর্তনের চাবিকাঠি আছে মানুষের হাতেই।