কোভিড-১৯ মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভারত ৬২৪ জন চিকিৎসককে হারিয়েছে, তার মধ্যে দিল্লিতে চিকিৎসকদের সর্বাধিক মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বলে ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (Indian Medical Association)-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এছাড়াও ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (IMA)-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, কোভিডের কারণে দেশের মধ্যে দিল্লিতে ১০৯ জন এবং বিহারের ৯৬ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে উত্তর প্রদেশে ৭৯ জন, রাজস্থানে ৪৩ জন, ঝাড়খণ্ডে ৩৯ জন, অন্ধ্র প্রদেশে ৩৪ জন, তেলঙ্গানায় ৩২ জন, গুজরাটে ৩১ জন এবং পশ্চিমবঙ্গে ৩০ জন চিকিৎসক করোনা ভাইরাসে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউয়ে মৃত চিকিৎসকদের প্রায় ৪৫ শতাংশই দিল্লি, বিহার, নয়তো উত্তরপ্রদেশের।
প্রায় ১ লক্ষেরও বেশি মানুষ মারা গেছে এবং লক্ষাধিক মানুষ সংক্রামিত হয় করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউয়ে বলে জানা গেছে।
রোগীদের সুস্থ করার জন্য চিকিৎসক, নার্স এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের ওভারটাইম করতে হয়, ডাবল শিফ্টও করেন তারা। হাসপাতালে ভালো চিকিৎসা হওয়ার পরও অক্সিজেনের অভাবে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বেশিরভাগ সময় আইসিইউ (ICU)-র অভ্যন্তরে থাকায় এবং কোভিড রোগীদের মৃত্যুর আগে পর্যন্ত যোগাযোগের শেষ মাধ্যম হওয়ার কারণে চিকিৎসক এবং নার্সদের মানসিক স্বাস্থ্য এই সময় খারাপ হতে থাকে, বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
যদিও ভারতে কোভিডের সংক্রমণ সম্প্রতি হ্রাস পেয়েছে, তবু এখনও প্রায় ৩০০০ মানুষ প্রতিদিন মারা যাচ্ছে এবং স্বাস্থ্য পরিসেবা ব্যবস্থার উপর যথেষ্ট চাপ রয়েছে। এছাড়াও ছোট শহর এবং গ্রামে কম বেতন, দীর্ঘ সময়ের শিফট এবং কর্মীদের ঘাটতি সহ অন্যান্য সমস্যাগুলির কথা আগেই জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা।
চিকিৎসকরাজানিয়েছেন, ওষুধ এবং অক্সিজেনের পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকার কারণে রোগীদের বাঁচানোর ক্ষেত্রে দ্বিধাগ্রস্থ হয়ে পড়ছেন এবং মানসিক ভাবে আঘাত পাচ্ছেন।
কোভিড ফিল্ড হাসপাতাল তৈরীতে সহায়তাকারী একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা রবিকান্ত সিংহ জানান, “সবচেয়ে খারাপ দিকটি ছিল … অক্সিজেনের অভাবে আমরা অনেক জীবন বাঁচাতে পারিনি, সেই কারণে কিছু রাত ঘুমানোর জন্য নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়েছিল।”