আজ জাতীয় ডক্টর্স ডে (National Doctor`s Day)। বিশিষ্ট ও প্রবাদপ্রতীম চিকিৎসক বিধানচন্দ্র রায়ের (Dr. Bidhan Chandra Roy) জন্মদিন ও মৃত্যুবার্ষিকী আজ। বিশিষ্ট চিকিৎসক তথা পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়কে শ্রদ্ধা জানাতে প্রথমবার উদযাপন করা হয় ডক্টর্স ডে। করোনাভাইরাস অতিমারী পরিস্থিতিতে নিজেদের জীবন বাজি রেখে লড়াই করছেন চিকিৎসকরা। এই কঠিন সময়ে চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের অবদান ও আত্মত্যাগ দেখেছে বিশ্ববাসী।
তাঁদের নিরলস প্রয়াসকে কুর্নিশ জানাতে এবারের জাতীয় ডক্টর্স ডে-র তাৎপর্য আরও অনেক বেশি। অতিমারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রথম সারির যোদ্ধা তাঁরা। করোনা আক্রান্তদের জীবন বাঁচাতে দিনরাত এক করে পরিশ্রম করছেন চিকিৎসকরা। তাঁদের অবদান অপরিসীম। এই দিনে মানুষকে ডাক্তারদের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করা হয়। আজ আমরা জানব কবে ভারতে ডক্টর্স ডে শুরু হয়েছিল এবং ডঃ বিধান চন্দ্র রায় কে ছিলেন?
জাতীয় ডক্টর্স ডে কখন শুরু হয়েছিল?
বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের অবদান কে সম্মান জানাতে ১৯৯১ সালে তৎকালীন সরকার কর্তৃক ভারতে প্রথম উদযাপন করা হয়েছিল জাতীয় ডক্টর্স ডে। তারপর থেকে প্রতি বছর ১ জুলাই জাতীয় ডক্টর্স ডে পালিত হয়। এই দিনটি ভারতের মহান চিকিৎসক বিধান চন্দ্র রায়কে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাতে উদযাপন করা হয়।
ডঃ বিধান চন্দ্র রায় কে ছিলেন?
ডাঃ বিধান চন্দ্র রায় বিহারের পাটনা জেলায় ১৮৮২ সালে ১ জুলাই জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি কলকাতার ক্যাম্পবেল মেডিক্যাল স্কুলে (বর্তমানে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ) শিক্ষাগ্রহণ করেছিলেন। তারপরে তিনি লন্ডন থেকে এমআরসিপি এবং এফআরসিএস উপাধি অর্জন করেন। এরপর ১৯১১ সালে তিনি চিকিৎসক হিসেবে জীবন শুরু করেছিলেন কলকাতার ক্যাম্পবেল মেডিক্যাল স্কুল (বর্তমানে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ) থেকে। ১৯৪২ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে মনোনীত হয়েছিলেন। ১৯৬১ সালে ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়কে ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্নে ভূষিত করা হয়েছিল। ৮০ বছর বয়সে, ১৯৬২ সালে, নিজের জন্মদিনের দিন অর্থাৎ ১ জুলাই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন।
সমাজসেবক থেকে শুরু করে রাজনৈতিক যাত্রা:
বিধান চন্দ্র রায় একজন চিকিৎসক হওয়ার পাশাপাশি একজন সমাজসেবক, আন্দোলনকারী এবং রাজনীতিবিদ ছিলেন। অসহযোগ আন্দোলনে বিধান চন্দ্র রায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন। প্রাথমিকভাবে লোকেরা তাঁকে মহাত্মা গান্ধী এবং জওহরলাল নেহেরুর ডাক্তার হিসাবে জানত। তিনি মহাত্মা গান্ধীর নির্দেশে সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে প্রবেশ করেছিলেন। রাজনীতিতে পা রাখার পর তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন এবং পরে তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী পদও গ্রহণ করেছিলেন। তিনি পাঁচটি নতুন শহরের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যেগুলি হল দূর্গাপুর, বিধাননগর, কল্যাণী, অশোকনগর-কল্যাণগড় ও হাবড়া। চৌদ্দ বছরের তাঁর মুখ্যমন্ত্রীত্বকালে নবগঠিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উন্নতি সম্ভব হয়েছিল। তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্বের জন্য তাঁকে পশ্চিমবঙ্গের রূপকার নামে অভিহিত করা হয়।
করোনাকালে চিকিৎসকের অবদান:
মুমূর্ষ রোগীদের কাছে চিকিৎসকরা যেন দেবদূতের মতন। চিকিৎসকরা নিজেদের সময় এবং জীবনের চিন্তা না করে সর্বদা তাঁর রোগীদের জীবন বাঁচানোর জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেন। করোনাকালে চিকিৎসকরা করোনা ওয়ারিয়র্সের ভূমিকা যেভাবে পালন করছে তা সত্যিই মনে রাখার মতো।
করোনা মোকাবিলায় চিকিৎসকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য, এই বিশেষ দিনে সকল ডাক্তার ও স্বাস্থ্য কর্মীদের ‘ Bong Life and More ‘-এর পক্ষ থেকে কুর্নিশ।