১৯ জুন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)-র ৫১ তম জন্মদিন। এই উপলক্ষে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সেবা দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নেহেরু-গান্ধী পরিবারের (Nehru–Gandhi family) চতুর্থ প্রজন্মের সদস্য রাহুলের মধ্যে নেহেরু, ইন্দিরা (Indira Gandhi) বা রাজীব গান্ধী (Rajiv Gandhi)-র মতো ক্যারিশম্যাটিক প্রভাব না থাকা সত্ত্বেও তাঁর কাছ থেকে সর্বদা একই জাদুর আশা করা হয়। রাহুল গান্ধীর অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক তাঁর এবং কংগ্রেসের ভবিষ্যতের বিষয়ে একধরণের ‘বিচার বিবেচনা’ করছেন। তবে আজ আমরা জানব রাজনীতিতে নামার আগে তাঁর জীবন কেমন ছিল।
শৈশবকাল জনজীবন থেকে দূরে:
১৯ জুন, ১৯৭০ সালে দিল্লিতে জন্ম নেওয়া রাহুল, ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী এবং সোনিয়া গান্ধীর প্রথম সন্তান। তিনি শৈশবকাল দিল্লী ও দেরাদুনের মধ্যে কাটিয়েছিলেন। প্রথম জীবনে তিনি জনজীবন থেকে দূরে থাকতেন। তাঁর জন্মের সময় তাঁর ঠাকুরমা ইন্দিরা গান্ধী ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৮১ থেকে ১৯৮৩ এর মধ্যে তিনি উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনের দুন স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন, যেখানে তাঁর বাবাও পড়াশোনা করেছিলেন।
হোম স্কুলিংয়ের পর কলেজ জীবন:
১৯৮৪ সালে যখন ইন্দিরা গান্ধীকে হত্যা করা হয়েছিল তখন রাহুলের পড়াশোনায় প্রথম বাধা সৃষ্টি হয়। ওই পরিস্থিতিতে সুরক্ষার কথা ভেবে, রাহুল এবং তার বোন প্রিয়াঙ্কাকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত বাড়িতে পড়াশোনা করানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ১৯৮৯ সালে, রাহুল স্নাতকোত্তর শিক্ষার জন্য স্পোর্টস কোটায় দিল্লির সেন্ট স্টিফেন কলেজে ভর্তি হন। সেই সময় রাহুলের র্যাগিং-এর ছবি আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
১৯৯০ সালে, রাহুল গান্ধী অর্থনীতি পড়ার জন্য হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। তবে তার বাবা রাজীব গান্ধীকে ১৯৯১ সালে এলটিটিই(LTTE)-র জঙ্গিরা হত্যা করে এরপর তিনি নিরাপত্তার কারণে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার রোলিন্স কলেজে চলে যান, যেখান থেকে তিনি ১৯৯৪ সালে বিএ ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।
১৯৯৫ সালে, রাহুল ডেভলপমেন্ট স্টাডিতে এমফিল করার জন্য কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে ভর্তি হন। রাহুলকে সুরক্ষিত রাখার জন্য এই কলেজে তাঁর নাম সু রাহুল বিংসী লেখা হয়েছিল। তাঁর বাবা রাজীব গান্ধী এবং ঠাকুরমার বাবা জওহরলাল নেহেরুও এই কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।
কলেজ জীবনের পর কর্মজীবন:
স্নাতক ডিগ্রি লাভ করার পর রাহুল লন্ডনে মনিটর গ্রুপ নামে একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তিন বছর কাজ করেছিলেন, যা মাইকেল পোর্টার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ২০০২ সালে, তিনি মুম্বাইয়ের একটি প্রযুক্তি ভিত্তিক আউটসোর্সিং সংস্থা ব্যাকপস সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেডের অন্যতম পরিচালক হন।
২০০৪ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ:
২০০৪ সালে রাহুল রাজনীতিতে প্রবেশ করেছিলেন, যেখানে নেহেরু-গান্ধী পরিবারের উত্তরাধিকার হিসেবে কংগ্রেস দলকে পরিচালনা করার ক্ষেত্রে বারবার তাঁকে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। ২০০৪ সালের মে মাসে উত্তরপ্রদেশে তাঁর বাবার সংসদীয় আসন আমেঠি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এবং লোকসভার সদস্য হিসেবে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন।