Gulzar Birthday: হিন্দি সিনেমার বিখ্যাত ও কিংবদন্তী গীতিকার গুলজার (Gulzar) সাহেব, ১৯৩৪ সালের ১৮ আগস্ট ব্রিটিশ ভারতে (British India)(এখন পাকিস্তান) পাঞ্জাবের (Punjab) ঝিলাম জেলার, দিনায় (Dina) জন্মগ্রহণ করেন। গুলজার সাহেব শুধুমাত্র একজন অসাধারণ গীতিকারই নন, একজন ভালো পরিচালকের পাশাপাশি একজন দুর্দান্ত সংলাপ লেখক এবং চিত্রনাট্যকারও। তিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে হিন্দি সিনেমায় এক অনবদ্য ছাপ রেখেছেন।
গুলজার সাহেবের শৈশবের নাম ছিল সমপূরণ সিং কালরা (Sampooran Singh Kalra)। ওনার পিতা মাখন সিং কালরা (Makhan Singh Kalra) দুটি বিয়ে করেছিলেন। তিনি তাঁর পিতার দ্বিতীয় স্ত্রী সুজন কৌর-এর (Sujan Kaur) একমাত্র সন্তান। ছোটবেলায় গুলজার সাহেব তাঁর মাকে হারিয়েছিলেন। দেশভাগের পর গুলজার সাহেবের পুরো পরিবার পাঞ্জাবের অমৃতসরে বসতি স্থাপন করে। ওনার প্রথম জীবন ছিল সংগ্রামে ভরা।
অমৃতসরে কিছু সময় কাটানোর পর গুলজার সাহেব কাজের সন্ধানে মুম্বই চলে গিয়েছিলেন। মুম্বই পৌঁছানোর পর তিনি একটি গ্যারেজে মেকানিক হিসেবে কাজ শুরু করেন। তবে শৈশব থেকেই, কবিতা এবং শের-শায়রীর শখের কারণে তিনি তাঁর অবসর সময়ে কবিতা লিখতেন। গ্যারেজের কাছে একটি বইয়ের দোকান ছিল, যেখানে আট আনার বিনিময়ে দুটি বই পড়তে দেওয়া হত। গুলজার সাহেব সেখানে পড়াশোনা করতে পছন্দ করতেন।
একদিন বিখ্যাত প্রযোজক- পরিচালক বিমল রায়ের (Bimal Roy) গাড়ি খারাপ হয়ে যায়। ভাগ্যবশত বিমল রায় তাঁর গাড়ি সাড়াতে সেই গ্যারেজে পৌঁছেছিলেন যেখানে গুলজার সাহেব কাজ করতেন। বিমল রায় গ্যারেজে গুলজার সাহেব এবং তাঁর বইগুলোকে দেখে প্রশ্ন করেন, এই সব বই কে পড়ে? গুলজার সাহেব বলেন, আমি! তখন বিমল রায় গুলজার সাহেবকে নিজের ঠিকানা দিয়ে পরের দিন দেখা করার জন্য বলেন। গুলজার সাহেব আজও বিমল রায়ের কথা বলার সময় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন এবং তিনি বলেন, ‘আমি যখন প্রথমবার বিমল রায়ের অফিসে গিয়েছিলাম, তখন তিনি বলেছিলেন আর কখনো গ্যারেজে যাবে না!’
এরপর গুলজার বিমল রায়ের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন এবং তাঁর প্রতিভা আরও উজ্জ্বল ভাবে ফুটে ওঠে। ১৯৬৩ সালে ‘বন্দিনী’ (Bandini) ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল। এই ছবির সব গান শৈলেন্দ্র (Shailendra) লিখেছিলেন কিন্তু একটি গান লিখেছিলেন সমপূরণ সিং কালরা অর্থাৎ গুলজার সাহেব। গুলজার ‘বন্দিনী’ ছবির জন্য ‘মোরা গোরা অঙ্গ লাই লে, মোহে শ্যাম রং দে দে’ (Mora Gora Ang Layle) গানটি লিখেছিলেন, সেই সময় এই গানটি খুব বিখ্যাত হয়েছিল এবং এই গানটির সঙ্গে গুলজার সাহেবের ভাগ্যও খুলে গিয়েছিল।
এরপর গুলজার সাহেব হিন্দি সিনেমার অনেক ছবির গান এবং সংলাপ থেকে শুরু করে স্ক্রিপ্টও লিখেছেন। ১৯৭৩ সালে গুলজার সাহেব অভিনেত্রী রাখি মজুমদারের (Rakhee Majumdar) সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের মেয়ে মেঘনার (Meghna Gulzar) বয়স যখন প্রায় দেড় বছর, তখন এই সম্পর্ক ভেঙে যায়। যদিও তাঁরা দুজনে কখনো ডিভোর্স নেননি এবং মেঘনাও সবসময় তাঁর বাবা -মায়ের ভালোবাসা পেয়েছিলেন।
বেশ কয়েকটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার (Filmfare Awards), জাতীয় পুরস্কার (National Film Awards), সাহিত্য আকাদেমি (Sahitya Akademi Award), পদ্মভূষণ (Padma Bhushan) এবং ২০০৮ সালের ছবি ‘স্লামডগ মিলিয়নেয়ার’এর (Slumdog Millionaire) ‘জয় হো’ (Jai Ho) গানের জন্য অস্কার (Oscars) পুরস্কার ও ২০১২ সালে ‘দাদা সাহেব ফালকে’ পুরস্কার (Dadasaheb Phalke Award) বলে দেয় যে এই একজন ব্যক্তি কত কিছু অর্জন করেছেন।
আরও পড়ুন