Happy Birthday Sourav Ganguly: ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলির আজ ৪৯তম জন্মদিন। বর্তমানে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড অফ কন্ট্রোলের সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলিকে বিশ্বের অন্যতম অধিনায়ক হিসাবে গণ্য করা হয়। সৌরভ গাঙ্গুলিকে ভারতে এমন এক অধিনায়ক হিসাবে দেখা হয়, যিনি ভারতীয় ক্রিকেট দলকে ফিক্সিংয়ের ফাঁদ থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলেন। এছাড়াও গাঙ্গুলি তাঁর ‘দাদাগিরি’র জন্যও পরিচিত।
প্রিন্স অফ কলকাতা’, ‘অফ সাইডের ভগবান’ এবং ‘দাদা’ নামে খ্যাত সৌরভ গাঙ্গুলি ১৯৯২ সালের ১১ জানুয়ারী, ভারতের হয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলেন। লর্ডসে অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরিও করেছিলেন তিনি। অধিনায়ক হিসাবে গাঙ্গুলি ১৪৬টি ওয়ান ডে এবং ৪৯টি টেস্ট ম্যাচে টিম ইন্ডিয়ার দায়িত্ব সামলেছেন। সৌরভ গাঙ্গুলির নেতৃত্বে ভারতীয় দল ৭৬টি ওয়ান ডে এবং ২১টি টেস্ট ম্যাচ জিততে পেরেছিল এবং ১৫ টি টেস্ট ড্র হয়েছিল। সৌরভ গাঙ্গুলি ২০০১ সালে অস্ট্রেলিয়াকে ২-১-এ হারিয়ে ঐতিহাসিক জয়ের পাশাপাশি টিম ইন্ডিয়াকে বিদেশের মাটিতে ম্যাচ জয়ের অভ্যাস তৈরি করে দিয়েছিলেন।
১৯৭২ সালের ৮ জুলাই কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন সৌরভ গাঙ্গুলি। প্রথমদিকে, সৌরভ গাঙ্গুলি ফুটবলে কেরিয়ার গড়তে চেয়েছিলেন, তবে তাঁর বড় ভাই ক্রিকেটার হওয়ার কারণে তিনিও ক্রিকেট খেলতে শুরু করেছিলেন। আজ সৌরভ গাঙ্গুলির জন্মদিনে, আমরা তাঁর ‘দাদাগিরি’র কিছু অজানা গল্প জানব।
“হরভজন দলে না আসা পর্যন্ত আমি ঘর ছাড়ব না”:
এই গল্পটি ২০০১ সালের। সেই সময় দাদা সদ্য অধিনায়ক হয়েছিলেন। তবে তাঁর ‘দাদাগিরি’ নতুন ছিল না। এটি বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি সম্পর্কিত গল্প। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজের জন্য ভারতীয় দলের হয়ে কে কে খেলবে, তা নির্বাচন চলছিল। সৌরভ বলেছিলেন, তিনি দলে হরভজন সিংকে চান, তবে নির্বাচকরা তাঁর সঙ্গে একমত পোষণ করছিলেন না। তবে দাদা অনড় ছিলেন। তিনি স্পষ্ট বলেছিলেন, হরভজনকে দলে না নেওয়া পর্যন্ত তিনি ঘর ছেড়ে বাইরে যাবেন না।
এরপর সৌরভ গাঙ্গুলির কথা মেনে নিতে বাধ্য হন নির্বাচকরা। সেই ম্যাচে রিকি পন্টিং, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট এবং শেন ওয়ার্নকে আউট করে হরভজন হ্যাটট্রিক করেছিলেন। তিনি প্রথম ইনিংসে সাতটি এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ছয়টি উইকেট নিয়েছিলেন। এর পরের গল্প ইতিহাসে লিপিবদ্ধ করা রয়েছে।
পানীয় না নিয়ে যাওয়ার কারণে দলের বাইরে বেরিয়ে যেতে হয়েছিল সৌরভ গাঙ্গুলিকে :
সৌরভ যখন দলে একজন নবাগত, তখনকার ঘটনা এটা। একজন সিনিয়র খেলোয়াড়ের জন্য তাঁকে মাঠে পানীয় নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু সৌরভ তা করতে রাজি হননি। বেশ কয়েকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, সৌরভ গাঙ্গুলিকে যেভাবে আদেশ দেওয়া হয়েছিল তা তাঁর পছন্দ হয়নি এবং সেই কারণেই তিনি মাঠে পানীয় নিয়ে যেতে অস্বীকার করেছিলেন। এরপর সৌরভকে দল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল।
ফিল্মি স্টাইলে বিয়ে:
খুব কম লোকই জানেন যে সৌরভ তাঁর বান্ধবী ডোনা রায়ের সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করেছিলেন।
আসলে প্রথমে দু’জনের পরিবার এই বিয়েতে রাজি ছিল না। তাই সৌরভ এবং ডোনা বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তবে পরে তাঁদের পরিবার রাজি হয় এবং ১৯৯৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সৌরভ গাঙ্গুলি এবং ডোনা রায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
এভাবেই লেফটি ব্যাটসম্যান হয়েছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলি:
ব্যাটিং ছাড়া সৌরভ গাঙ্গুলি তাঁর সমস্ত কাজ ডান হাত দিয়ে করেন।
তিনি ডান হাতে বোলিং, লেখালেখি এবং প্রায় সব কিছুই করেন। তবে তিনি বাম হাতে ব্যাট করতে শিখেছিলেন, যাতে তিনি তাঁর ভাই স্নেহাশিস গাঙ্গুলির ক্রিকেট কিটটি ব্যবহার করতে পারেন।
টি-শার্ট খুলে জবাব দিয়েছিলেন ইংল্যান্ডকে:
সৌরভ গাঙ্গুলির নাম শুনলে, লর্ডসের বারান্দায় দাঁড়িয়ে তার নিজের টি-শার্ট খোলার ছবিটি সব ভারতীয়দের মনে পড়ে যায়।
তবে আপনারা কী জানেন তিনি কেন এমন করেছিলেন? আসলে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে-তে ইংল্যান্ড জয়ী হওয়ার পর অলরাউন্ডার অ্যান্ড্রু ফ্লিন্টফ মাঠে তাঁর টি-শার্ট খুলে ছিলেন। এর প্রতিক্রিয়ায় লর্ডসে ভারতের ঐতিহাসিক জয়ের পর সৌরভ নিজের টি-শার্ট খুলে খুশি প্রকাশ করেছিলেন।
আরও পড়ুন
জীবন যুদ্ধে মাথা নত না করে, ইতিহাস সৃষ্টিকারী এক দৌড়বিদ-এ উন্নীত হয়েছিলেন মিলখা