পুলিৎজার পুরস্কার জয়ী চিত্রসাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকির (Danish Siddiqui) মৃত্যুর পর তালিবান (Taliban) একটি বিবৃতি জারি করেছে। সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকির মৃত্যুর সঙ্গে তাঁদের নিজেদের ভূমিকা থাকার বিষয়টি স্পষ্টভাবে অস্বীকার করেছে তালিবান এবং দানিশ সিদ্দিকির মৃত্যুর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে তাঁরা। শুক্রবার সিদ্দিকি কান্দাহারে আফগান সুরক্ষা বাহিনী এবং তালিবানদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা কভার করছিলেন, তখন তাকে হত্যা করা হয় বলে সূত্রের খবর।
আফগানিস্তানে ভারতীয় চিত্র সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকির মৃত্যুর পরে তালিবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “গুলির লড়াই চলাকালীন কাদের গুলি তাঁর লেগেছিল এবং কীভাবে তিনি মারা গিয়েছিলেন তা আমরা জানি না। আমরা ভারতীয় সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকির মৃত্যুর জন্য দুঃখিত।”
এছাড়াও মুজাহিদ কভারেজের জন্য আসা সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “যুদ্ধ ক্ষেত্রে (war zone) প্রবেশ করার আগে যে কোনো সাংবাদিকের উচিত তাঁর সম্বন্ধে আমাদের জানিয়ে দেওয়া। জানা থাকলে আমরা সেই ব্যক্তি বিশেষের সুরক্ষার দিকটি খেয়াল রাখব ও যথাযথ যত্ন নেব। আমরা দুঃখিত যে সাংবাদিকরা আমাদের না জানিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করছেন।”
তালিবানরা পাকিস্তানের মূল সীমান্ত পার করে আফগানিস্তানে প্রবেশের চেষ্টা করার সময় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেই সময় চিত্র সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকি কান্দাহার স্পিন বোল্ডাকে সংঘর্ষের ঘটনা কভার করছিলেন। যুদ্ধক্ষেত্রের নিকটবর্তী বাসিন্দা মোহাম্মদ জহির বলেন, শহরের মূল বাজারে তালিবান ও সেনাবাহিনীর মধ্যে প্রচণ্ড গোলাগুলি চলছিল। এই সীমান্তবর্তী অঞ্চলটি দিয়ে পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে সরাসরি প্রবেশ করা যায়, যে জায়গা কয়েক দশক ধরে তালিবানের শীর্ষ নেতৃত্ব কব্জা করে রেখেছে।
সূত্রের খবর, আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের (Reuters) সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকির মরদেহ আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির (International Committee of the Red Cross) (ICRC) হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এখন তাঁর মরদেহ ভারতে নিয়ে আসার প্রস্তুতি চলছে বলে খবর।
৪০ বছর বয়সী দানিশ সিদ্দিকির বাড়ি মুম্বইয়ে। দিল্লীর জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন তিনি। দানিশ নিজের কেরিয়ার শুরু করেছিলেন টেলিভিশন সাংবাদিক হিসেবে। তবে পরে তিনি চিত্র সাংবাদিকতাকেই নিজের পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। ২০১০ সালে রয়টার্সে একজন শিক্ষানবীশ চিত্রসাংবাদিক হিসেবে যুক্ত হয়েছিলেন দানিশ। রয়টার্সে যুক্ত হওয়ার ছয় বছরের মধ্যেই ইরাকের মসুলের যুদ্ধের ছবি তুলতে গিয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও দানিশ সিদ্দিকি ২০১৫ সালে হওয়া নেপালের ভূমিকম্পের ছবি এবং ২০২০ সালে হওয়া দিল্লির দাঙ্গার ছবিও তুলেছিলেন। ভারতের প্রথম পুলিৎজার জয়ী চিত্রসাংবাদিক হলেন তিনি। ভারতের রয়টার্সের ফটোগ্রাফারদের দলটির প্রধান ছিলেন দানিশ সিদ্দিকি।
আরও পড়ুন
জীবন যুদ্ধে মাথা নত না করে, ইতিহাস সৃষ্টিকারী এক দৌড়বিদ-এ উন্নীত হয়েছিলেন মিলখা