রূপম দত্ত: কথায় আছে বাঙালির ১২ মাসে ১৩ পারবন, আর সেই ১৩ পারবনের এক পারবন হল সোনামুখীর কালী পূজো। আর সোনামুখী তো প্রক্ষাতই কালী কার্তিকের জন্যই, চোখ ধাঁধানো জাঁকজমক দিয়ে ঘেরা এই পুজো দেখতে প্রত্যেক বছর হাজার হাজার মানুষের আগমন ঘটে সোনামুখীতে। ঐতিহ্যবাহী এই পুজো নিয়ে রীতিমতো গর্ব করেন সোনামুখীবাসী। কিন্তু সেই আনন্দ টিকলো না বেশিক্ষন, পুজোর পরের দিনই ঘটে গেল এক দুষ্কর্ম। সোনামুখী শহরের বুকে থাকা তিনটি কালি মন্দির থেকে চুরি হয়ে ছিল মায়ের সোনা ও রূপোর তৈরি লক্ষাধিক টাকার গহনা।
করোনা কাল পেরিয়ে এই বছর কলী পুজোর প্রস্তুতি ছিল তুঙ্গে, সোনামুখীবাসী মেতে উঠেছিল উত্সবে। কিন্তু এর মাঝেই ২৫ অক্টোবর মঙ্গলবার মধ্য রাতে শহরের থাকা তিনটি কালি মন্দির থেকে চুরি হয়ে যায় মায়ের সোনা ও রূপোর তৈরি প্রায় ২০ লক্ষ টাকার গহনা। পরদিন বুধবার সকালে শহর জুড়ে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই তৈরি হয় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি। চুরির ঘটনা তিনটি সোনামুখী পৌরসভার অন্তর্গত ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরী পাড়ার প্রায় ৫০০ বছর পুরানো চৌধুরী পরিবারের কালী মন্দির, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের চট্টোপাধ্যায় পরিবারের চামুন্ডা কালী মন্দির ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষ্ণবাজারের বারোয়ারি কালী মন্দিরে ঘটে ছিল। চুরি যাওয়ার খবর জানার সাথে সাথেই সোনামুখী থানায় দায়ের করা হয় তিনটি পৃথক এফআইআর। মামলার ভিত্তিতে তদন্তে নামেন সোনামুখী থানার পুলিশ অফিসারেরা। তদন্তে দ্রুততা আনতে গঠন করা হয় এক বিশেষ তদন্তকারী দল। সময়সীমা বেঁধে তারা নামেন গহনা উদ্ধারে, লক্ষ স্থির করা হয় সোনামুখীর আরেক অন্যতম উৎসব কার্তিক পুজোর আগে যেকরেই হোক চোর ধরবেন। প্রশাসন এই চুরির পিছনে কোন বড়সড় রেকেট বা গ্যাং এর হাত থাকতে পারে বলেও মনে করছিল।
আর যা বলা, তাই কাজ চুরি যাবার ২০ দিনের মাথায় তদন্ত শেষ করে অপরাধীদের গ্রেফতার করে মা এর চুরি যাওয়া গহনা উদ্ধার করেন ফিরিয়ে দেন মা কালীকে। সোনামুখীর মানুষদের ভরসার মূল্য দিয়ে সময়সীমার আগেই গহনা উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারকৃত গহনা ও চার অপরাধী সহ ছবি বাঁকুড়া জেলা পুলিশ তার ফেসবুক পেজে শেয়ার করে লেখেন “সোনামুখীর মানুষের ভরসা ও আবেগের প্রতিদান!” এবং ঘটনাটি বর্ণনা করেন।