বর্ধমানে কাঞ্চননগরের কঙ্কালেশ্বরী মন্দির সংলগ্ন মাঠে প্রতি বছরের মতো এবারও আয়োজিত হল সর্ব ধর্মের মিলন মেলা ‘গণবিবাহ’। এক-দু’ জোড়া নয়, হিন্দু-মুসলিম মিলিয়ে সর্বমোট ১০১টি বিয়ে হল রবিবার। বিধায়ক খোকন দাস প্রত্যেক বছর এই এলাকায় পশ্চিমবঙ্গ সহ বিভিন্ন রাজ্যের অসহায়, গরীব-দুঃস্থ পাত্রপাত্রীর বিয়ের আয়োজন করিয়ে থাকেন। শুধু বিয়ে দিয়েই শেষ নয়। সঙ্গে থাকে প্রয়োজনীয় দান সামগ্রী ও এক মাসের রেশন।
২০১৪ সাল থেকে নিজ এলাকা কাঞ্চননগরেই গণ বিবাহ আয়োজন করে আসছেন বিধায়ক খোকন দাস। শুরুর বছরগুলিতে পরিসংখ্যান কম হলেও বর্তমানে ১০১ জোড়া চার হাত এক করেছেন তিনি। হিন্দু হলে শাস্ত্র মতে, বা মুসলিম হলে কলমা করে বেশ জাকজমকের সাথেই বসে বিয়ের আসর। অন্যান্য বিয়ের তুলনায় খামতি নেই কোথাও। কণে সাজানো থেকে বরযাত্রী বা কণেযাত্রীর ভুরিভোজ থেকে গানের অনুষ্ঠানে জমে উঠেছিল বিয়েবাড়ি। বর্ধমানের কঙ্কালেশ্বর মন্দির প্রাঙ্গণে এক সুবিশাল বিবাহ আসর আয়োজন করা হয় গত রবিবার। ১০১টি বিয়ের পাত্র-পাত্রীর মধ্যে ১৪টি ছিল মুসলিম সম্প্রদায়ের।
বাংলা পঞ্জিকা মতে ১ বৈশাখ থেকেই শুরু হয়ে যায় পাত্র পাত্রীর খোঁজ। এরপর দেখাশোনা শেষে একটা শুভ দিন ঠিক হয়। সেদিনই একসাথে ১০১ জোড়া পাত্রপাত্রীর নতুন জীবনে পথচলা শুরু। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের অসহায়, দুঃস্থ মানুষদের শনাক্ত করা হয় যাদের বাড়িতে অবিবাহিত কন্যা বা পুরুষ রয়েছে। যারা অভাবের কারণে বিয়ে করতে পারছে না, এমন দিকগুলি নজর রেখে।
মেয়েদেরকে সাজানো হচ্ছে কনের সাজে। অন্যদিকে বর আসছে টোটোয় বসে বাজনা বাজিয়ে। মেয়েদের জন্য উপহারে থাকছে সোনার নাকছাবি, ইমিটিশন গয়না সহ একাধিক জিনিস। ছেলেদের জন্য হাত ঘড়ি আর সোনার আংটি। এছাড়াও দেওয়া হচ্ছে ভারী যৌতুক। খাট,আলমারি,টিভি,সাইকেল সহ আগামী এক মাসের রেশন যার মধ্যে রয়েছে চাল,ডাল,আলু প্রভৃতি। এর সাথে পাত্র পাত্রী উভয়ের নামে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে LIC-র জীবন বীমা।
একদিকে যেমন বিয়ে চলছে, অন্যদিকে চলছে বরযাত্রী ও কনেযাত্রীর ভুরিভোজ। সাধারন কোনও বিয়ের থেকে কোনও অংশেই পিছিয়ে নেই এই গণবিবাহের প্রাঙ্গণ।