দেশের অন্যতম শিক্ষাক্ষেত্রের অ্যাপ বাইজুস শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ফোন নম্বর জোগাড় করে ভয় দেখাচ্ছে। এই বাইজুস প্রতারণার অভিযোগ করছে জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন বা NCPCR। এই সূত্রে গত সপ্তাহে শুক্রবার কমিশন ডাক পাঠিয়েছিল বাইজু-এর সিইও বাইজু রবীন্দ্রনকে সমন কে। বাইজুসের তরফ থেকে সব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়।
ন্যাশনাল কমিশন ফর দ্য প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস (NCPCR) দাবি করেছে, বাইজুস কোম্পানি বাচ্চাদের এবং তাদের বাবা-মায়ের ফোন নম্বর ক্রয় করছে এবং তাদের হুমকি দিচ্ছে যে তারা বাইজুস থেকে কোর্স না কিনলে বাচ্চাদের ভবিষ্যত নষ্ট হয়ে যাবে।
এন.সি.পি.সি.আর চেয়ারপারসন প্রিয়াঙ্ক কানুনগো মঙ্গলবার এ.এন.আইকে জানিয়েছে “আমরা জানতে পেরেছি যে বাইজু কীভাবে বাচ্চাদের এবং তাদের অভিভাবকদের ফোন নম্বর কিনেছে, তাদের কঠোরভাবে অনুসরণ করছে এবং তাদের ভবিষ্যত ধ্বংস হয়ে যাবে বলে হুমকি দিচ্ছে। তারা মূলত প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের টার্গেট করছে। এ ব্যাপারে আমরা শিঘ্রই ব্যবস্থা নেব এবং প্রয়োজন হলে সরকারকে লিখিত রিপোর্ট জানাবো।
বাইজুসের কোর্সগুলি অন্যায়ভাবে বিক্রির অভিযোগে গত সপ্তাহের শুক্রবার অর্থাৎ ২৩ শে ডিসেম্বর কমিশন বাইজুস-এর সিইও বাইজু রবীন্দ্রনকে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।
বাইজুস অবশ্য কোম্পানির একটি বিবৃতিতে এই সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছে। বাইজুস দৃঢ়ভাবে জানিয়েছে যে তারা শিক্ষার্থীদের ডাটাবেস ক্রয় করে না। তাদের বক্তব্য “আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি যে আমরা কখনই কোন ডাটাবেস কিনিনি এবং আশা করি যে মিডিয়া এই ধরনের ভিত্তিহীন এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকবে,”
সমগ্র ভারতের ১৫০ মিলিয়নেরও বেশি শিক্ষার্থীদের সাথে বাইজুস ভারতে ব্যাবসা করছে। ভারতের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ব্র্যান্ডের তালিকায় বাইজুস রয়েছে 19 নম্বর স্থানে। তাই কোম্পানির বক্তব্য বাইজুসকে বাহ্যিক ডেটাবেস কেনার বা ব্যবহার করার দরকার নেই। এতে বলা হয়েছে, “আমরা আমাদের অ্যাপ ব্যবহারকারী দের ওপর জোর দিই। আমরা কখনই কোল্ড কল বা অনির্ধারিত পরিদর্শন করি না। আমরা দৃঢ়ভাবে কোনো শিক্ষার্থী বা তাদের অভিভাবকদের হুমকি জাতিয় ফোন কলের অভিযোগ অস্বীকার করছি ।”
কমিশনের তরফ থেকে সংবাদ প্রতিবেদনে আরও অভিযোগ করা হয়েছে যে, বাইজুস সক্রিয়ভাবে গ্রাহকদের বিভিন্ন কোর্সের জন্য ঋণ-ভিত্তিক চুক্তিতে প্রতারণা করছে। গ্রাহকরা যদি বাইজুসের পরিসেবা গ্রহণ করে, তবে সেই টাকা আর ফেরত দেওয়া হবে না। কমিশন ইতিমধ্যেই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের থেকে অনেক অভিযোগ পেয়েছে। তাই কমিশন এবার বাইজুসের বিরূদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে। এই সূত্রেই ডাক পাঠানো হয়েছে বাইজুসের কর্ণধার বাইজু রবীন্দ্রনকে।
CPCR আইন, ২০০৫ এর ধারা ১৪ এর অধীনে, কমিশনের কাছে দেওয়ানী কার্যবিধি কোড, ১৯০৮ এর অধীনে মামলা করার এবং বিশেষ করে, নিম্নলিখিত বিষয়গুলির ক্ষেত্রে একটি দেওয়ানী আদালতের সমস্ত ক্ষমতা রয়েছে যেমন,
(ক) যে কোনও ব্যক্তিকে তলব করা, সেই ব্যক্তির উপস্থিতি কার্যকর করা এবং তাকে পরীক্ষা করতে শপথ বাক্য পাঠ করানো।
(খ) তদন্তের জন্য কোনো নথির আবিষ্কার ও উৎপাদন।
(গ) হলফনামায় প্রমাণ গ্রহণ।
(ঘ) কোনো আদালত বা অফিস থেকে কোনো পাবলিক রেকর্ড বা তার অনুলিপি চাওয়া।
(ঙ) তদন্তের জন্য কমিশন কোনো সাক্ষী বা নথির পরীক্ষা করা।
কমিশনের তরফে বলা হয়েছে, যদি রবীন্দ্রন যদি কোনো আইনানুগ অজুহাত ব্যতীত আদেশটি পালন করতে ব্যর্থ হন, তবে তিনি “কোড অফ সিভিল প্রসিডিউর, ১৯০৮-এর আদেশ XVI-এর বিধি ১০ এবং বিধি ১২ অনুসারে অনুপস্থিতির শিকার হবেন”।