নিউজ ডেস্ক; সেই একই অবস্থান নিল সিপিএম। বঙ্গ সিপিএমের দাবিতেই সিলমোহর কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অর্থাৎ পলিটব্যুরোর। বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোটে থাকলেও তৃণমূলের সঙ্গে ঘর করতে রাজি নন তাঁরা। শুধু তাই নয়, বাংলার তৃণমূল ও কেরলে কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব রাখতে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সমন্বয় কমিটিতে প্রতিনিধি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত পার্টির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটির।
এতে একই লড়াইয়ে একাধিক বিরোধী জোটের সমীকরণ তৈরি করে ফেলেছে সিপিএম। কোথাও তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই, কোথাও কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই, কোথাও বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই। আবার কোথাও সবাই মিলে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই। এতে রাজনৈতিক নেতাদের কাছেই অবস্থান তালগোল পাকিয়ে ফেলছে, এই অবস্থায় সাধারণ ভোটারদের অবস্থা তো নৈবনৈব চ। তবে সংবিধান রক্ষার স্বার্থে ইন্ডিয়া জোটে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে সিদ্ধান্ত নিলেন সীতারাম ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাটরা।
বাংলার ভোট ব্যাঙ্কের স্বার্থে ‘ইন্ডিয়া’ জোট থেকে সরে থাকতে হবে। ও কোনওভাবেই তৃণমূলের সঙ্গে জোট বার্তা দেওয়া যাবে না নিচু তলার কর্মীদের কাছে। তাহলেই আবার ফের ধরাশায়ী হতে পারে ভোট ব্যাঙ্ক। চলে যেতে পারে বিজেপিতে। তাই সব দিক ভেবেই কঠিন সিদ্ধান্ত সিপিএম (CPM) শীর্ষনেতৃত্বর।
শনি ও রবিবার পার্টির পলিটব্যুরোর বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আরও জানা গিয়েছে, শুধু নিজেদের কথাই তাঁরা ভাবছে এমন নয়। ইণ্ডিয়া জোটের কথাও ভাবছে এই বাম দল। তাই ইন্ডিয়া জোটে শরিক সংখ্যা বাড়াতে উদ্যোগ নেবে পার্টি নেতৃত্ব।
ঘটনার সূত্রপাত হয়, বিজেপির বিরুদ্ধে যৌথ লড়াইয়ে নামে সমস্ত বিরোধী দলগুলি। তৈরি হয় ‘ইন্ডিয়া’ জোট। বামেরা প্রথম থেকেই সেই লড়াইয়ে থাকলেও পাকাপাকিভাবে তৃণমূল সেই জোটে নাম লেখাতেই বিপাকে পড়ে সিপিএম। গত কয়েক বছরে রাজ্যে তৃণমূল বনাম বিজেপি লড়াইয়ে রাজ্য বিধানসভা বাম শূন্য হয়েছে বামেরা। তৃণমূল বিরোধী লড়াইয়ে ভরসা রাখতে পারেননি দলীয় কর্মীরাও। বামের ভোট রামে যাওয়াতেই সাইনবোর্ড হয়েছে সিপিএম। তাই সেই ভুল আর নয় । বিজেপির পাশাপাশি দুর্নীতির ইশুতে কোনওভাবে তৃণমূলের সঙ্গে আপোষ করছে না বাংলার সিপিএম। এই বার্তা দিতেই কঠোর হয়েছে সেলিমরা।
ইতিমধ্যে, সিপিএম সাধারণ সম্পাদক যেভাবে মমতা ব্যানার্জির ও তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রেখে চলছিলেন তাতে ক্ষুব্ধ হয় বঙ্গ সিপিএম নেতৃত্ব। এতে কর্মীদের মনোবলে আঘাত লেগেছে। এভাবে চললে ভবিষ্যতে তার ফল ভুগতে হবে মনে করে সিপিএম।
তাই এই সিদ্ধান্ত। সাফ জানানো হয়েছে, দেশের সংবিধান আক্রান্ত হচ্ছে বিজেপির আমলে। দেশের নাম বদলের পাশাপাশি ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’-এর মতো ‘অসাংবিধানিক’ সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে এই মোদি সরকার।
নির্বাচন কমিশনকে ভূমিকাহীন করার পাশাপাশি কমিশনের শীর্ষপদে নিজেদের লোক বসাতে চাইছে মোদি শিবির। এই অবস্থায় ‘ইন্ডিয়া’ জোটে দলের দূরত্ব বাড়ালে গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে তা স্পষ্ট।