Friday, April 26, 2024

Independence Day: ১৫ ই আগস্ট প্রধানমন্ত্রী নেহেরুর প্রথম ভাষণ, যা ইঙ্গিত দিয়েছিল এক নতুন ভারত গড়ার

Independence Day: ১৫ আগস্ট, এই দিনটিতে দেশে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করার পাশাপাশি ভারত মাতার সেই হাজার হাজার সাহসী সন্তানদের স্মরণ করা হয়, যারা হাসতে হাসতে দেশের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ১৯৪৭ সালে আজকের দিনে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু (Jawaharlal Nehru) ইন্ডিয়া গেটের পাশে অবস্থিত প্রিন্সেস পার্কে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। লুইস মাউন্টব্যাটেন তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। পতাকা উত্তোলনের পর জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয় এবং ৩১ তোপের সালামি দেওয়া হয়েছিল সেদিন।

প্রধানমন্ত্রী নেহেরু সেদিন প্রথমবার ভাষণ দিয়েছিলেন। নেহরু বলেছিলেন, “বহু বছর আগে আমরা ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করেছিলেন, এখন সময় এসেছে যখন আমরা আমাদের অঙ্গীকার থেকে মুক্ত হব। সম্পূর্ণ ভাবে না হলেও এটি গুরুত্বপূর্ণ। আজ রাত ১২ টায় যখন পুরো বিশ্ব ঘুমিয়ে থাকবে, তখন ভারত একটি স্বাধীন জীবনের লক্ষ্যে নতুন সূচনা করবে।” নেহেরুর ভাষণ ভারতের জনগণের জন্য একটি নতুন, মুক্ত ভোরের আশা জাগিয়েছিল। এছাড়া দেশ ভৌগলিক এবং অভ্যন্তরীণভাবে সাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে বিভক্ত হওয়া সত্ত্বেও দেশবাসীর মনে সাহস জাগিয়েছিল।

নেহেরু তাঁর ভাষণে বলেছিলেন, “এটি এমন এক সময় হবে যা ইতিহাসে খুব কমই দেখা যায়। পুরনো থেকে নতুনের দিকে অগ্রসর হওয়া, একটি যুগের অবসান ঘটা। এবার থেকে বছরের পর বছর ধরে শোষিত দেশের আত্মা নিজের কথা বলতে পারবে।” তিনি বলেছিলেন, এটি একটি কাকতালীয় ঘটনা যে সম্পূর্ণ নিষ্ঠার সঙ্গে আমরা ভারত ও তার জনগণের সেবা করার অঙ্গীকার নিচ্ছি। ইতিহাসের সূচনার সাথে সাথে, ভারত তার অনুসন্ধান শুরু করে এবং বহু শতাব্দী তার দুর্দান্ত সাফল্য এবং ব্যর্থতায় ভরা।

তিনি বলেছিলেন, সময় ভালো হোক বা খারাপ, ভারত এই অনুসন্ধানের বিষয় থেকে সরে যায়নি। আদর্শকে কখনো ভুলে যায়নি যা সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি দিয়েছে। আজ আমরা একটি যুগের ইতি টানছি, কিন্তু অন্যদিকে ভারত নিজেকে অনুসন্ধান করে চলেছে। আমরা আজ যে উপলব্ধি উদযাপন করছি তা নতুন সুযোগের সূচনার দিকে একটি পদক্ষেপ মাত্র। আরও বড় জয় এবং উপলব্ধি আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আমাদের কি এই সুযোগটি উপলব্ধি করে সামনে থাকা চ্যালেঞ্জগুলি গ্রহণ করার জন্য প্রজ্ঞা এবং শক্তি আছে?

জওহরলাল নেহেরু তাঁর বক্তৃতার সময় বলেছিলেন, ভবিষ্যতে আমাদের বিশ্রাম করা যাবে না, এমনকি শান্তিপূর্ণভাবে বসলেও চলবে না, ক্রমাগত চেষ্টা করতে হবে। তবেই আমরা যা বলছি তা পূরণ করতে পারব। ভারতের সেবা করা মানে কোটি কোটি ভুক্তভোগীদের সেবা করা। এর অর্থ অজ্ঞতা এবং দারিদ্র্য দূর করা, রোগ নির্মূল করা এবং সুযোগের বৈষম্য দূর করা। আমাদের প্রজন্মের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষদের এমনই ইচ্ছা ছিল যে, প্রতিটি চোখের জল যেন মুছে ফেলা যায়।

Jawaharlal Nehru Independence Day Speech 1947

তিনি বলেছিলেন, হয়ত এটা আমাদের পক্ষে পুরোপুরিভাবে করা সম্ভব নয়, কিন্তু যতদিন মানুষের চোখে জল থাকবে এবং তাঁরা কষ্ট পাবেন ততদিন আমাদের কাজ শেষ হবে না। তাই আমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে যাতে আমরা আমাদের স্বপ্নকে সত্যি করতে পারি। এই স্বপ্নগুলি ভারতের পাশাপাশি সমগ্র বিশ্বেরও। আজ কেউ নিজেকে সম্পূর্ণ আলাদা ভাবতে পারে না, কারণ সমস্ত জাতি এবং মানুষ একে অপরের সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। শান্তিকে যেমন ভাগ করা যায় না, তেমনিই ভাগ করা যায় না স্বাধীনতাকেও। এই পৃথিবীকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করাও যায় না। আমাদের এমন একটি মুক্ত মহান ভারত গড়ে তুলতে হবে যেখানে তার সব সন্তানরা একসঙ্গে থাকতে পারবে।

নেহরু বলেছিলেন, আজ সঠিক সময় এসেছে, একটি এমন দিন যা ভাগ্যের দ্বারা নির্ধারিত এবং বছরের পর বছর সংগ্রামের পরে আবারও ভারত জাগ্রত ও মুক্ত। আমাদের অতীত আমাদের সঙ্গে জুড়ে আছে। আমরা যে প্রতিশ্রুতি নিয়েছি তা রক্ষা করার আগে অনেক কিছু করতে হবে। কিন্তু আমাদের জন্য একটি নতুন ইতিহাস শুরু হয়েছে, এমন একটি ইতিহাস যা আমরা তৈরি করব এবং যার সম্পর্কে অন্যরা লিখবে।

পণ্ডিত নেহরু বলেছিলেন, এটি আমাদের জন্য সৌভাগ্যের সময়, একটি নতুন তারার জন্ম হয়েছে, প্রাচ্যের স্বাধীনতার নক্ষত্র। একটি নতুন আশা জন্মেছে। এই তারাটি কখনো যেন অস্ত না হয়ে যায় এবং এই আশা কখনো যেন ম্লান না হয়। আমরা সর্বদা এই স্বাধীনতার সঙ্গে যেন সুখী থাকি। ভবিষ্যত আমাদের ডাকছে।

পণ্ডিত নেহেরু ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ায় ১৭তম শতকের স্মৃতিস্তম্ভ লাহোর গেটের উপরে ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। এটিকে লাহোরি গেট বলা হতো কারণ এই গেটের সামনের রাস্তা সেই সময় লাহোরের দিকে যেত। এখন প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবসে পথ আমরা গর্বের সঙ্গে দেখি, আমাদের প্রধানমন্ত্রী লালকেল্লায় ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং তারপর সেখান থেকে ভাষণ দেন।

আরও পড়ুন

Burdwan: স্বাধীনতা দিবসে ‘বাংলা আমার জন্মভূমি’ গান উপহার রূপঙ্করের, সুর বাঁধলেন বর্ধমানের সুপরিচিত সুরকার জুটি মিলন-সুমন

Rintu Brahma
Rintu Brahmahttp://www.bonglifeandmore.com
With over six years of dedicated journalism experience, I've transitioned into the role of Bengali Content Specialist at Inshort medialabs private limited after serving as a reporter at Sangbad Pratidin. Armed with a Master's degree in Mass Communication from The University of Burdwan, I bring a deep understanding of media dynamics to my work. Recently, I've embarked on a new journey with Bonglifeandmore.com, where I aim to leverage my expertise to contribute meaningfully to the platform. My commitment to excellence and continuous learning drives me to excel in every endeavor.

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Stay Connected

3,541FansLike
3,210FollowersFollow
2,141FollowersFollow
2,034SubscribersSubscribe
- Advertisement -

Latest Articles