Saturday, April 27, 2024

ভারত ও কানাডার মধ্যে সম্পর্কের অবনতির কারণ কী ? জানুন পুরো ঘটনা

শর্মিষ্ঠা ঘোষ

আচমকা গত কয়েকদিন ভারত ও কানাডার সম্পর্কে কালো মেঘের ঘনঘটা দেখা দিয়েছে। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের চরম অবনতি হয়েছে। আগে কানাডা ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিল খুবই মজবুত। সেদিক থেকেও ভারতীয়দের পছন্দ করেন কানাডিয়ানরা। তাই সেদেশে মোট বিদেশি জংসংখ্যার মধ্যে ভারতীয়দের সংখ্যা সর্বোচ্চ। প্রতিবছর বহু ভারতীয় উচ্চ শিক্ষা কিংবা কাজের জন্য কানাডায় যান। তাঁদের মধ্যে বহু সংখ্যায় সেখানের বাসিন্দা হয়ে থেকে যান। যাদের মধ্যে শিখদের সংখ্যাই অধিক। বহু কানাডিয়ান পর্যটকরাও আসেন ভারতে। কিন্তু হটাত কি এমন হল যে কানাডা ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক স্তরে এত তীব্রভাবে সরব হয়েছে ?

ঘটনার সূত্রপাত, চলতি বছরের ১৮ জুন। কানাডার মাটিতে একটি গুরুদ্বারের বাইরে মৃত্যু হয় হরদীপ সিং নিজ্জার নামের এক ব্যক্তির। তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ কানাডা প্রশাসনের। এই নিজ্জার হলেন কানাডার খলিস্তান টাইগার ফোর্স অর্থাৎ কেটিএফের প্রধান। তিনি আবার গুরুনানক গুরুদুয়ারার প্রধানও ছিলেন। অভিযোগ, তাঁকে দুই আততায়ী গুলি করে খুন করে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কানাডা সরকার দাবি করেছে, ‘এই হত্যাকাণ্ডে ভারতের হাত রয়েছে’। এই অভিযোগ তোলা হয় কানাডা পার্লামেন্টের অধিবেশনেও। এছাড়াও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ‘নিজ্জার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ভারতীয় এজেন্টের যে যোগ রয়েছে, তার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণও রয়েছে’। এ নিয়ে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলেন জি-টোয়েন্টি সম্মেলনে এসে।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের এক কূটনীতিকে বহিষ্কারও করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু কানাডা সরকারের পক্ষ থেকে এই অভিযোগকে অস্বীকার ও অযৌক্তিক বলে দাবি করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এর সঙ্গেও তিনি কূটনীতিককে বহিষ্কারেও কড়া সমালোচনা করেছেন। কানাডা সরকারের এরকম কাজের প্রসঙ্গে ভারত সরকারও কানাডার এক সিনিয়র কূটনীতিবিদকে ৫ দিনের মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে।
এই টানাপোড়নের মধ্যেই ভারতে বসবাসকারী বা ঘুরতে যাওয়া কানাডিয়ানদের জন্য ভ্রমণ সংক্রান্ত কিছু নির্দেশিকা জারি করেছে সে দেশের সরকার। তার পাল্টা কানাডায় বসবাসকারী ভারতীয় পড়ুয়া, নাগরিকদেরও সতর্কভাবে থাকতে নির্দেশিকা জারি করেছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। কানাডার নাগরিকদের ভিসা দেওয়াও সাময়িক স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার।

অতএব সব মিলিয়ে বলা যায় ভারত ও কানাডার মধ্যে সম্পর্ক অবনতির মূল কারণ হল পঞ্জাবের খলিস্থান সমস্যা। খলিস্থানপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা কানাডার মাটিকে ভারত বিরোধী কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার করেছে, এমনই মন্তব্য করে নিউ দিল্লি। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে দুই দেশের সম্পর্ক কোন দিকে যায় সেটাই দেখার।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Stay Connected

3,541FansLike
3,210FollowersFollow
2,141FollowersFollow
2,034SubscribersSubscribe
- Advertisement -

Latest Articles