Kolkata: অবশেষে সুবিচার পেলেন পুলিশকর্তা। গ্রেপ্তার করা হল প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলরের ছেলেকে। অন্য মহিলার ছবির সঙ্গে পুলিশকর্তার মেয়ের মোবাইল নম্বর জুড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপত্তিকর পোস্ট করার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল ।
উত্তরপাড়া কোতরং পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কো-অর্ডিনেটর দীপক কুন্ডুর ছেলে অর্কদ্বীপ কুন্ডু। প্রায় একমাস পর আজ বারাসাতের নবপল্লী এলাকায় এক আত্মীয়র বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে।
পুলিশ কর্তার মেয়ে জানান, অর্কদ্বীপ কুন্ডু তাঁর প্রাক্তন সহপাঠী। তাঁর মোবাইল নম্বরের সঙ্গে অন্য মহিলার ছবি জুড়ে অর্কদ্বীপ সোশ্যাল মিডিয়ায় আপত্তিকর পোস্ট করে বলে অভিযোগে করেন তিনি। এছাড়াও তিনি জানান প্রথমে তিনি গুরুত্ব দেননি, কিন্তু গ্রুপ থেকে বেরিয়ে আসার পরও এসব চলতে থাকে। বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন আসতে থাকে তাঁর কাছে। দেশের পাশাপাশি বিদেশ থেকেও ফোন আসত। এমনকি রাতের দিকে ভিডিও কলও আসত এবং ফোন করে ও মেসেজ পাঠিয়ে কু-প্রস্তাব দেওয়া হত তাঁকে। এছাড়াও তাঁর ফোন নম্বর ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সংবাদমাধ্যমে পুলিশ কর্তা জানিয়েছিলেন, প্রায় দেড় মাস আগে অভিযুক্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর মেয়ের নামে একটি ভুয়ো আইডি তৈরি করেছিল, সেই আইডি থেকে তাঁর মেয়ের ফটোশপ করা অশ্লীল ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ছবির সঙ্গে তাঁর মেয়ের ফোন নম্বর এবং হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। অভিযুক্ত নিজে ফোন করেও অশ্লীল কথাবার্তা বলেছে তাঁর মেয়েকে বলে জানান তিনি।
গত ১২ জুন গোটা ঘটনা জানিয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন পুলিশ কর্তার স্ত্রী এবং তাঁর মেয়ে। তবে তাতেও কোনো লাভ হয়নি কারণ পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি আইনের ধারা প্রয়োগ করার বদলে, জামিনযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করে বলে সংবাদমাধ্যমে অভিযোগ করেছিলেন পুলিশ কর্তা। পুলিশ কর্তা সংবাদমাধ্যমে বলেন, পুলিশ হয়ে পুলিশের কাছে জাস্টিস পেলেন না। পুলিশ কর্তার স্ত্রী বলেছিলেন, কেন অভিযুক্তকে ধরতে এত দেরি হচ্ছে এই সব ভেবে আতঙ্কে ছিলেন তিনি। তিনি বলেছিলেন, নেতার ছেলে বলে কি দেরি হচ্ছে তাকে ধরতে? নেতার পাঠানো কেউ যদি আক্রমণ করে তবেও কি পুলিশ চুপচাপ থাকবে? এদিনের পর নড়েচড়ে বসে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার এই মামলার সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি ধারার ৬৬ সি, ৬৬ ই, ৬৭ এ ধারা যুক্ত করা হয়। তথা তথ্যপ্রযুক্তি ধারার ৬৬ সি আইডেন্টিটি থ্রেট, ৬৬ ই আপত্তিকর ছবি তোলা, ৬৭ এ আপত্তিকর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা। পাশাপাশি যুক্ত করা হয়েছে ৩৫৪ ডি, অর্থাৎ আপত্তিকর ছবি এবং মোবাইল নম্বর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়ে সম্মানহানি করার চেষ্টা করা। শনিবার এই সমস্ত ধারা যুক্ত হওয়ার পর রবিবার বারাসাত থেকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন
আধুনিক যুগে জীবনের সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে সোশ্যাল মিডিয়া, জানুন এর ইতিহাস